৫ শ্রাবণ, ১৪৩২

২০ জুলাই, ২০২৫

বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিনকে নিয়ে মন্তব্য, কক্সবাজারে এনসিপির পথসভা পণ্ড

নয়া শতাব্দী ডেস্ক প্রকাশিত: জুলাই ১৯, ২০২৫, ৮:০৮ অপরাহ্ন
বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিনকে নিয়ে মন্তব্য, কক্সবাজারে এনসিপির পথসভা পণ্ড

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে মন্তব্য করার জের ধরে কক্সবাজারে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দুটি পূর্বনির্ধারিত পথসভা পণ্ড হয়ে গেছে।

আজ শনিবার কক্সবাজারের চকরিয়া ও ঈদগাঁও উপজেলায় এনসিপির এই সভা হওয়ার কথা থাকলেও বিএনপি কর্মীদের বাধার মুখে তা পণ্ড হয়। চকরিয়ায় এনসিপির সভাস্থলের মঞ্চও ভাঙচুর করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।

এদিন সকালেই জুলাই মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরির শহীদ দৌলত ময়দানে এক সমাবেশ করে এনসিপি। সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, আওয়ামী লীগের সময়ে নারায়ণগঞ্জে এক গডফাদার ছিল—শামীম ওসমান। এখন শুনছি শিলং থেকে কক্সবাজারে আরেক গডফাদার এসেছে। সে জমি দখল করছে, চাঁদা নিচ্ছে।

সরাসরি কারো নাম উল্লেখ না করেই তিনি আরও বলেন, সে সংস্কার বলতে কিছুই বোঝে না।

বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, পিআর না বোঝা এসব কথিত সংস্কারবিরোধীদের কক্সবাজারের মানুষ প্রতিহত করবে।

তার বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরপরই বিএনপি ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলো জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ শুরু করে। বিকেলের কর্মসূচি শেষে বিএনপির বাধার মুখে এনসিপির গাড়িবহর ঈদগাঁওয়ে সমাবেশস্থলে না গিয়েই কক্সবাজার ত্যাগ করে।

চকরিয়ায় জনতা শপিং সেন্টারের পাশে ট্রাকে মঞ্চ তৈরি করেছিল এনসিপি। বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটের দিকে বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা সেটি ভেঙে ফেলে। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে। বিকেল ৫টার দিকে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাদের ওই সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার কথা ছিল।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক আছে।

এদিকে কক্সবাজার শহরে ছাত্রদল কর্মীরা এনসিপির ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে এবং পোস্টারে আগুন দেয়। পরে তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে।

বিক্ষোভ সমাবেশে ছাত্রদল নেতা ফাহিমুর রহমান বলেন, সালাহউদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশের গর্ব। নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী তার বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্য করেছেন। নাসীরুদ্দীনের পারিবারিক ও সামাজিক শিক্ষার অভাব আছে—তাই তিনি এমন কথা বলেছেন।

পেকুয়া ও উখিয়াসহ জেলার অন্যান্য এলাকাতেও বিএনপির প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসন থেকে তিনবার সংসদ সদস্য ছিলেন (১৯৯৬ থেকে ২০০৬ সাল)। ২০০৮ সালে এই আসন থেকে তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব এসএম সুজাউদ্দিন বলেন, শনিবার ঈদগাঁও ও চকরিয়ায় দলের কোনো পূর্বঘোষিত সমাবেশ ছিল না। স্থানীয় নেতাকর্মীরা নিজ উদ্যোগে ওইসব এলাকায় পথসভার আয়োজন করেছিলেন এবং সময় পেলে কেন্দ্রীয় নেতারাও সেখানে অংশগ্রহণ করতেন।

তিনি জানান, ঈদগাঁওর সভা বাধার কারণে করা যায়নি এবং চকরিয়ার সভার জন্য তৈরি করা মঞ্চ বিএনপি কর্মীরা ভাঙচুর করেছে। 'কক্সবাজারেও আমাদের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা ও পোড়ানো হয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'কেউ কোনো বক্তব্যে আঘাত পেলে শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিবাদই সঠিক প্রতিক্রিয়া। এটিই সবাইকে উৎসাহিত করা উচিত।'

এনসিপির নেতারা বর্তমানে বান্দরবানের পথে আছেন বলেও জানান তিনি।

নয়াশতাব্দী/ইআর