
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। অনশনের কারণে ইতোমধ্যেই ছয়জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এরমধ্যে একজনকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও চিকিৎসা শেষে তিনি আবার অনশনে যোগ দিয়েছেন।
সোমবার (১২ মে) রাত সাড়ে ৯টায় এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
এরপর রাত ১১টা ৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় তাঁরা অনশন শুরু করেন। তবে প্রায় ১৭ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও প্রশাসন কিংবা সংশ্লিষ্ট কোনো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে কোনো সাড়া মেলেনি।
তীব্র গরমে এবং দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার ফলে ওয়াহিদুর রহমান, শওকত ওসমান স্বাক্ষর, এনামুল হক, ইমন হওলাদার, আহসান আহমেদ ত্বোহা এবং রবিউল ইসলাম নামের ছয়জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্যে ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তিনিও পুনরায় এসে অনশনে অংশ নিয়েছেন।
অনশনরত শিক্ষার্থী এনামুল হক বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে উপাচার্যের পদত্যাগ বা অপসারণের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু আমাদের দাবি উপেক্ষা করা হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে আমরা আমরণ অনশনে বসেছি।
আমাদের জীবন দিয়ে হলেও এই স্বৈরাচার উপাচার্যের অপসারণ নিশ্চিত করব।”
শিক্ষার্থী নাজমুল ঢালি জানান, “উপাচার্যের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি চলবে। আজ বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে আমরা সড়ক অবরোধ কর্মসূচিও শুরু করব।”
আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হাফিজ আশরাফুল হক বলেন, “শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার ব্যক্তিগত সহকারী জানিয়েছেন, তিনি ব্যস্ত রয়েছেন। এখনো পর্যন্ত কোনো সাড়া পাইনি।
ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিতে অনড়।”
মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সুজয় শুভ বলেন, “প্রচণ্ড গরমে এখন পর্যন্ত ছয়জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। সময় যতই গড়াবে, অসুস্থ শিক্ষার্থীর সংখ্যাও ততই বাড়বে। আমরা চাই দ্রুত আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হোক এবং শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরার ব্যবস্থা করা হোক।”
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সোনিয়া খান সনির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
নয়াশতাব্দী/এসআর