
রাজধানীর ব্যস্ত রুটগুলোর মধ্যে অন্যতম আব্দুল্লাহপুর-খিলক্ষেত-বনানী। প্রতিদিন হাজারো যাত্রী এই রুটে চলাচল করেন। কিন্তু এই পথ পাড়ি দিতে গিয়ে তাদের একটি অদৃশ্য ট্যাক্স মেটাতে হয়—হিজড়াদের ‘চাঁদা’।
যাত্রীরা জানান, সাধারণত ট্রাফিক সিগন্যালে বা ভিড়ের ফাঁকে হিজড়ারা বাসে উঠে জোরপূর্বক টাকা আদায় করেন। কেউ দিতে না চাইলে অপমানজনক ভাষা, অঙ্গভঙ্গি কিংবা ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায় করা হয়। এ যেন এক নিঃশব্দ সন্ত্রাস।
নিয়মিত চলাচলকারী যাত্রীদের ভাষ্য, সাধারণত আব্দুল্লাহপুর-খিলক্ষেত এবং বনানী—এই তিনটি পয়েন্টে হিজড়ারা বাসে উঠে যাত্রীদের কাছ থেকে প্রতিটি জায়গায় ১০ টাকা করে মোট ৩০ টাকা আদায় করে। ফেরার পথেও একইভাবে আরেক দফা আদায় করা হয়। ফলে প্রতিদিন যাতায়াতে গড়ে ৬০ টাকা চলে যাচ্ছে এই অপ্রাতিষ্ঠানিক ‘চাঁদা’ খাতে।
একজন নিয়মিত যাত্রী বলেন, “যাইতে ৩০ টাকা, আসতে ৩০ টাকা। মাসে ২০ দিন অফিসে গেলে ১২০০–১৫০০ টাকা শুধু এইখানেই চলে যায়। এটা তো ভাড়া না,এটা চাঁদা। এ অর্থের কোনো রিসিট নেই, নেই কোনো সরকারি তদারকি বা আইনগত কাঠামো।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি একটি সামাজিক ও প্রশাসনিক ব্যর্থতা। একজন নাগরিকের নিরাপদ যাতায়াতের মৌলিক অধিকার প্রতিনিয়ত বিঘ্নিত হচ্ছে এই অনিয়ন্ত্রিত চাঁদাবাজির কারণে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসচালক বলেন, “আমরা কিছু বলতে পারি না। বললে তারা ঝামেলা করে, যাত্রীদের বিরক্ত করে। আবার অনেকে তো নিজেরাও ভয়ে চুপ থাকেন।”
জনসাধারণের দাবি, এই অনিয়ন্ত্রিত অর্থ আদায়ের বিষয়ে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হোক। না হলে এভাবে প্রতিদিন হাজারো যাত্রীর পকেট কেটে যাচ্ছে অবলীলায়, যার কোনো জবাবদিহিতা নেই।
নয়াশতাব্দী/ই