
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় বিয়ের মাত্র সাত দিনের মাথায় স্ত্রীর হাতে নির্মম হত্যার শিকার হলেন স্বামী মেহেদী হাসান (২৭)। এ ঘটনায় স্ত্রী জান্নাত আক্তারকে (১৭) আটক করেছে স্থানীয় থানা পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে জান্নাত আক্তার। মেহেদি হাসানের পৈত্রিক বাড়ি কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায়। সে প্রায় ২০ বছর ধরে মাকে নিয়ে মসজিদপাড়ায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।
শুক্রবার (১৬ মে) দিবাগত মধ্যরাতে পৌরশহরের মসজিদ পাড়ায় এ হত্যার ঘটনা ঘটে। নিহত মেহেদী হাসান মৃত জলফু মিয়ার ছেলে। সে পৌরশহরের মসজিদ পাড়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনের বাড়ির ভাড়াটিয়া।
নিহতের পরিবার ও পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, গত ৯ মে পারিবারিকভাবে মেহেদি হাসানের সঙ্গে মসজিদ পাড়ার আল আমিনের মেয়ে জান্নাত আক্তারের বিয়ে হয়। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে মেহেদী হাসান রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পরে। ভোর রাতে নিহতের স্ত্রী বাড়ির মালিককে ডেকে বলে তার স্বামী অসুস্থ। বাড়ির মালিক ও স্থানীয় লোকজন গিয়ে দেখে মেহেদী হাসান ঘরের মেঝেতে অচেতন অবস্থায় পরে আছে। তাকে উদ্ধার করে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত্যু ঘোষণা করে।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, জান্নাত আক্তারের বিয়ের আগ থেকেই অন্য এক ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিলো। বিয়ের পরও সেই সম্পর্ক অব্যাহত ছিল। সে তার স্বামীকে মেনে নিতে পারছিল না। অবৈধ সম্পর্কের কারণেই স্বামীকে হত্যা করতে পারে বলে অভিযোগ করছে নিহতের পরিবার।
নিহত মেহেদী হাসানের মা বকুল বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আট দিন হইছে আমার ছেলেরে বিয়ে করাইছে। বউয়ের অন্য ছেলের সাথে অবৈধ সম্পর্ক ছিল। হত্যাকান্ডে সরকারের কাছে ফাসি চাই।
আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ ছমিউদ্দিন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জান্নাত আক্তার তার স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। আরও জানতে পেরেছি, বিয়ের আগে এক ছেলের সাথে জান্নাত আক্তারের সম্পর্ক ছিল। বিয়ের পর থেকে সে তার স্বামীকে মেনে নিতে পারছিল না। গত রাতে স্বামীকে বলে তার ঘুম আসছে না বলে তাকে দিয়ে ঘুমের টেবলেট আনায়। পরে কোকের সাথে ৬টি ঘুমের টেবলেট খাইয়ে অচেতন করে। পরে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে স্বামীকে হত্যা করে। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নয়াশতাব্দী/এসআর