২১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

০৫ জুন, ২০২৫

দিনাজপুরে চাহিদার চেয়ে কোরবানির পশু বেশি

দিনাজপুর প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুন ১, ২০২৫, ২:২৭ অপরাহ্ন
দিনাজপুরে চাহিদার চেয়ে কোরবানির পশু বেশি

আসন্ন ঈদুল আজহায় দিনাজপুরের খামারিরা কোরবানির পশু নিয়ে প্রস্তুত থাকলেও চাহিদার তুলনায় জেলায় পশুর সংখ্যা অনেক বেশি।

জেলার ১৩টি উপজেলার ৬৮টি পশুর হাটে এবছর ৪ লাখ ৫৯ হাজার ৯১টি পশু বেচাকেনার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা ২ লাখ ৬৯ হাজার ৮৬৫টি। চাহিদার তুলনায় ১ লাখ ৩৬ হাজার ১২৬টি অতিরিক্ত পশু প্রস্তুত রয়েছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় এ বছর ১ লাখ ৬৪ হাজার ৭৯টি গরু, ৫৭৭টি মহিষ, ২ লাখ ২০ হাজার ৭৮৬টি ছাগল এবং ২০ হাজার ৫৪৯টি ভেড়া বিক্রির জন্য প্রস্তুত। এ গুলো জেলার ৬২ হাজার ১০৮টি খামারি এবং স্থানীয় বাড়িতে লালন-পালন করা হয়েছে।

খামারিরা বলছেন, পশু লালন-পালনের খরচ গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়েছে। সদর উপজেলার খামারি শাহীন আলম জানান, গো-খাদ্য, ওষুধ এবং শ্রমিকদের মজুরির ব্যয় বেড়ে গেছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, গত বছর যে গরুটি প্রস্তুত করতে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল, এ বছর তার জন্য ৬৫-৭০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। ভারত থেকে গরু আমদানি বন্ধ থাকায় দেশীয় খামারিরাই বাজারের মূল যোগানদাতা। এতে একদিকে স্থানীয় উৎপাদকরা লাভবান হচ্ছেন, তবে উৎপাদন খরচ বাড়ায় মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য কোরবানির পশু কেনা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আব্দুর রহিম জানান, জেলার পশুর হাটগুলোতে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মহাসড়কের পাশে হাট বসানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং ৬৮টি স্থায়ী ও অস্থায়ী হাট নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিটি হাটে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ৩৮টি মেডিকেল টিম কাজ করবে। দিনাজপুরে ৫০ হাজার থেকে ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত দামের গরু বিক্রি হচ্ছে। জেলায় কোরবানির পশু থেকে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার লেনদেন হবে বলে আশা করছে জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর। চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত ১ লাখ ৩৬ হাজার ১২৬টি পশু রাজধানীসহ অন্যান্য জেলায় পাঠানো হবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, দিনাজপুরের এই যোগান দেশের অন্যান্য জেলার বাজারেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে খরচ বৃদ্ধির কারণে পশুর দামে বাড়তি চাপ অনুভূত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

নয়াশতাব্দী/ইআর