
এনবিআরকে দুই ভাগে বিভক্তির প্রতিবাদ এবং চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খানের অপসারণেরর দাবিতে কর্মকর্তা-কমর্চারিদের আন্দোলনে অচল অবস্থা বিরাজ করছে। এ অবস্থা থেকে উত্তোরণে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় বিসিএস (কর) এবং বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ক্যাডারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। আজ বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে দেশের সুশীল সমাজ, ব্যবসায়ী সংগঠন, অর্থনীতিবিদ এবং উন্নয়ন সহযোগিরা রাজস্ব কার্যক্রমের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাজস্ব নীতি ও বাস্তবায়নের কাজ পৃথকীকরণের পরামর্শ দিয়ে আসছেন। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে গত ৯ অক্টোবর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সংস্কার বিষয়ে একটি পরামর্শক কমিটি গঠন করে। ওই পরামর্শক কমিটির দাখিল করা রিপোর্ট পর্যালোচনা করে গত ১৬ জানুয়ারি উপদেষ্টা পরিষদ রাজস্ব নীতি প্রণয়ন এবং প্রণীত নীতি বাস্তবায়ন করে রাজস্ব আহরণ-এ দুটো কার্যক্রম পৃথকীকরণের বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন প্রদান করে। পরবর্তীতে বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ও বিসিএস (কর) ক্যাডারের কর্মকর্তাগণ তাদের স্ব-স্ব এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দের তত্ত্বাবধানে অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর খসড়া প্রণয়ন করে মার্চের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে দাখিল করেন। দাখিল করা অধ্যাদেশের খসড়া পরিমার্জিত আকারে গত ১২ মে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে অধ্যাদেশটি জারি করা হয়।
অধ্যাদেশ জারীর পর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা ওই অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে গত ২০ মে অর্থ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ১৩ জন প্রতিনিধির উপস্থিতিতে ঘণ্টাব্যাপী সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, রাজস্ব সংস্কার কমিটিসহ সকল অংশীজনের সঙ্গে বিশদ আলোচনাক্রমে জারি অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার পর ওই অধ্যাদেশটি বাস্তবায়ন করা হবে। তারপরও আন্দোলন চলমান থাকায় ২৫ মে অর্থ উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে প্রেস রিলিজের মাধ্যমে আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে জারিকৃত অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে বলে জানালে আন্দোলনকারীরা তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন। ইতোমধ্যে ২২ জুন থেকে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আবারও আন্দোলন শুরু হলে অর্থ উপদেষ্টা ২৬ জুন বিকেল ৫ টায় বিসিএস (কর) এবং বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ক্যাডারের প্রতিনিধিদেরকে তার সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকার প্রত্যাশা করে যে, এই আলোচনার মাধ্যমে সব ভুল বোঝাবুঝির অবসানপূর্বক সকলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে জারিকৃত অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা সম্ভব হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে যার যার দপ্তরে অবস্থান করে অর্থবছরের শেষ কর্মদিবসগুলোতে রাজস্ব আহরণ কার্যক্রমে মনোনিবেশ করার জন্য অর্থ উপদেষ্টা অনুরোধ করছেন।
নয়াশতাব্দী/ইআর