২ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

১৭ মে, ২০২৫

হারিয়ে যাওয়া ১৮ ভরি স্বর্ণসহ নগদ টাকা ফিরিয়ে দিয়ে প্রশংসায় ভাসছে বগুড়ার শিক্ষার্থী খায়রুল

নয়া শতাব্দী প্রকাশিত: এপ্রিল ৫, ২০২৫, ৮:২১ পূর্বাহ্ন
হারিয়ে যাওয়া ১৮ ভরি স্বর্ণসহ নগদ টাকা ফিরিয়ে দিয়ে প্রশংসায় ভাসছে বগুড়ার শিক্ষার্থী খায়রুল

আলমগীর হোসেন, বগুড়া: 

পাবনার এক জুয়েলার্স ব্যবসায়ীর হারিয়ে যাওয়া ১৮ ভরি স্বর্ণ ও নগদ টাকা ব্যাগসহ ফেরত দিলেন বগুড়ার শিক্ষার্থী খায়রুল ইসলাম। খায়রুল জীবিকার জন্য সিএনজি চালালেও সে একজন কলেজের শিক্ষার্থী । খায়রুল  শুধু এক ব্যাগ স্বর্ণ নয় একটি সমাজ এবং দেশকে ফিরিয়ে দিয়েছেন বিশ্বাস। বগুড়ার তরুণ খায়রুল ইসলাম তার সততা ও মানবিকতায়  প্রশংসায় ভাসছেন। সাথে সাথে খায়রুল সমাজ ও দেশে স্মরনীয় হয়ে থাকবে।

জানা যায়,  ২৯ মার্চ পাবনার ফরিদপুর উপজেলার গোপালনগরের স্বর্ণ ব্যবসায়ী মো. শাহিন ব্যবসার কাজে বগুড়ায় আসেন। তিনি ১৮ ভরি স্বর্ণ কেনেন এবং সেই স্বর্ণ ও নগদ ১৫ হাজার টাকা একটি কালো ব্যাগে রেখে একটি সিএনজিতে উঠেন। বগুড়া শহরতলীর বনানী এলাকায় পৌঁছে হঠাৎ 'নবীন বরণ' লেখা একটি বাস দেখে তাড়াহুড়ো করে তাতে উঠে পড়েন। সিএনজিতে রয়ে যায় তার সেই কালো ব্যাগটি।

পরবর্তীতে শাজাহানপুরে ইফতারের বিরতিতে বিষয়টি বুঝতে পেরে তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েন। কোথাও কিছু না পেয়ে শেষে বাড়ি ফিরে যান ভেঙে পড়া মন নিয়ে।

এদিকে ব্যাগটি খুঁজে পান, মানবিক একজন সিএনজি চালক ও বগুড়া  সরকারি শাহ সুলতান কলেজের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী খায়রুল ইসলাম। দিনভর সিএনজি চালিয়ে নিজের পড়ালেখার খরচ চালান এই তরুণ। তিনি পরিচিত ট্রাফিক সার্জেন্ট আলমগীরের মাধ্যমে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে শুক্রবার রাতে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা  ওসি এসএম মঈনুদ্দীনের উপস্থিতিতে প্রকৃত মালিক শাহিনের হাতে ব্যাগটি তুলে দেন। ব্যাগে থাকা ১৮ ভরি স্বর্ণ ও ১৫ হাজার টাকা ছিল একদম অক্ষত।

ব্যাগ ফিরে পেয়ে আবেগাপ্লুত ব্যবসায়ী শাহিন বলেন, আমি ভেবেছিলাম সব হারিয়ে ফেলেছি। হারানোর পরও খায়রুল আমাকে সব ফিরিয়ে দিল। খায়রুলের সততা আমাকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। খায়রুলের মতো মানুষ থাকলে সমাজের কোনো ভয় থাকবে না। সমাজ ও দেশ টা নিরাপদ ও উন্নত হবে।

বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি এসএম মঈনুদ্দীন বলেন, ব্যবসায়ীর হারিয়ে সব স্বর্ণ ও টাকাসহ ব্যাগ খায়রুল ইসলাম ফিরিয়ে দিয়ে সমাজ ও দেশে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। খায়রুল ইসলামের মতো শিক্ষার্থীরা সমাজ এবং দেশের জন্য আশার আলো। খায়রুলের মতো ছেলে দেশের জন্য খুবই প্রয়োজন। সে শুধু সৎ নয়, দায়িত্বশীল ও মানবিক মানুষ ।