
ঈদ এলেই যেন নতুন আশার আলো দেখা দেয় ঢাকাই সিনেমার আকাশে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। দীর্ঘ সময় নীরবতায় ঢাকা পড়া ঢালিউড এবার আবারও চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। ঈদুল ফিতর ঘিরে মুক্তি পাওয়া নতুন ছবিগুলোর সাফল্য প্রমাণ করছে—দর্শক এখনো বাংলা সিনেমা দেখতে চায়, যদি গল্প হয় ভালো, নির্মাণ হয় যত্নের।
ঈদ-পরবর্তী২ ১২ দিনে ঢাকাই সিনেমার যে চিত্র দেখা যাচ্ছে, তা অনেকটাই আশাজাগানিয়া। দেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে দর্শকদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি চোখে পড়ছে। কোথাও কোথাও টিকিট না পেয়ে দর্শকদের ফিরেও যেতে হচ্ছে। হাউসফুল যাচ্ছে একাধিক সিনেমা।
সবচেয়ে আলোচনায় রয়েছে শাকিব খান অভিনীত ‘বরবাদ’ সিনেমাটি। টিকিট বিক্রি, শোয়ের সংখ্যা এবং দর্শকের আগ্রহ—সব দিক থেকেই এগিয়ে এই ছবি। এর পরে রয়েছে আফরান নিশো ও তমা মীর্জা অভিনীত ‘দাগি’, এবং সিয়াম আহমেদ অভিনীত ‘জংলি’। এই তিনটি সিনেমাই দর্শক টানছে প্রচুর। বিশেষ করে ‘জংলি’র চাহিদা এত বেড়েছে যে, এর শো সংখ্যা সম্প্রতি বাড়াতে হয়েছে।
এর আগেও দেখা গেছে, ঈদ উপলক্ষে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা দর্শকের মন জয় করতে সক্ষম হয়েছে। ‘পরাণ’ ও ‘হাওয়া’র মতো সিনেমাগুলোর ঈদ-সাফল্য এখনো স্মরণীয়। সেবার যেমন হঠাৎ ঘুরে দাঁড়িয়েছিল ঢাকাই সিনেমা, এবারও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে। আর তাই নতুন করে আশায় বুক বাঁধছেন পরিচালক, প্রযোজক, শিল্পীসহ সিনেমা-সংশ্লিষ্ট সকলেই।
ঈদে একসঙ্গে তিনটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছেন শহীদুজ্জামান সেলিম। তার চোখেও সিনেমা পাড়ার এই পরিবর্তন ইতিবাচক। তিনি বলেন, “ঈদকেন্দ্রিক হলেও ঢাকাই সিনেমায় সুবাতাস বইছে। এটি দেশের সিনেমার জন্য দারুণ ইতিবাচক একটি ইঙ্গিত। যদি এই ধারাবাহিকতা সারা বছর ধরে রাখা যায়, তাহলে আমাদের সিনেমা দ্রুত ঘুরে দাঁড়াবে।”
অন্যদিকে ‘দাগি’র অন্যতম মুখ তমা মীর্জা বলেন, “আমাদের দেশে এখন অনেক ভালো সিনেমা নির্মাণ হচ্ছে। দর্শকরা ভালো গল্প পেলে প্রেক্ষাগৃহে যেতে প্রস্তুত—এই ঈদের অভিজ্ঞতা আবারও সেটি প্রমাণ করেছে।”
‘জংলি’র নায়ক সিয়াম আহমেদ বলেন, “নিঃসন্দেহে বলতেই পারি, ঢাকাই সিনেমায় সুবাতাস বইছে। হোক না তা উৎসবকেন্দ্রিক। কিন্তু বইছে তো! আমাদের করণীয় হলো এই গতি ধরে রাখা।”
এদিকে ‘চক্কর ৩০২’ সিনেমার মাধ্যমে এবারের ঈদে পর্দায় এসেছেন মোশাররফ করিম। তিনি বলেন, “আমাদের সিনেমার রয়েছে গৌরবময় ইতিহাস। এবার দর্শক আবার হলে ফিরছে—এটাই সবচেয়ে বড় ব্যাপার। এই ধারাটি চলতে থাকুক, এটাই প্রত্যাশা।”