
টাঙ্গাইলের মধুপুর পৌর শহরের শেওড়াতলা এলাকায় এক নারীর বিরুদ্ধে নিজের সন্তানকে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্বামীর সাথে অভিমান করে কোলের শিশুকে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্বামী থানা-পুলিশকে ঘটনাটি জানালে শিশুটি উদ্ধারে প্রশাসনে হইচই পড়ে যায়। এরপর শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য রাতভর অভিযান চালিয়ে শিশুটি উদ্ধাররর পর আজ শুক্রবার ভোরে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয় পুলিশ।
শিশুটির পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পুন্ডুরা শেওড়াতলা এলাকার আজম আলীর ছেলে রবিউল ইসলামের সঙ্গে গোপালপুরের বলাটা গ্রামের লিটন মিয়ার মেয়ে লাবনী আক্তার লিজার দুই বছর আগে বিয়ে হয়। ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের এ বিয়ে। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই রবিউলের অসচ্ছলতার কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দেয়। অবস্থা বেগতিক দেখে রবিউল সংসারে শান্তির প্রয়োজনে বাড়ির পাশেই ঘরভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। গত চার মাস আগে তাদের সংসারে একটি পুত্রসন্তান জন্ম নেয়।
রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের ছেলে তামিমের জন্মের পর থেকে সংসারে শান্তি নেমে আসে। অল্প কয়েক দিন আগে লাবনী আমার ছেলে তামিমকে নিয়ে লাবনীর বোনের বাড়ি ভূঞাপুরে যায়। কয়েক দিন পর বাড়ি আসতে বললে লাবনী দুর্ব্যবহার করে। আমার সঙ্গে ঘরসংসার করবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। আমি কয়েক দিন পর আবার ফোন করে বলি তামিমের দাদা অসুস্থ। ছেলেকে নিয়ে আসো। সে তামিমকে দেখতে চাচ্ছে। লাবনী তাতেও ফিরে আসেনি। বারবার যোগাযোগের পর আজ লাবনী জানায় সে সন্তান বিক্রি করে দিয়েছে। পরে কৌশলে লাবনীকে ভূঞাপুর থেকে পাকুটিয়ায় ডেকে এনে ধরে বাড়ি নিয়ে আসি। এ সময় সে শিশু তামিমকে বিক্রি করার কথা স্বীকার করে। পরে পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়।’
শিশু তামিমের মা লাবনী আক্তার লিজা বলেন, ‘আমার মাথা ঠিক ছিল না। আমি মনির নামের একজনের সহযোগিতায় গত ১০ এপ্রিল সিরাজগঞ্জের এক লোকের কাছে ৪০ হাজার টাকায় তামিমকে বিক্রি করেছি। ওই টাকা দিয়া মোবাইল, পায়ের নূপুর ও নাকের নথ কিনছি। এইডা আমার ভুল হইছে। আমি খুবই অনুতপ্ত। এখন আমি আমার ছেলেকে ফেরত চাই। আমি অপরাধ করেছি। আমাকে শাস্তি দিন।
এ ব্যাপারে মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল কবীর বলেন, বৃহস্পতিবার লাবনী নামের এক মা তার চার মাসের সন্তানকে বিক্রি করেছে বলে আমাদের জানায় তার স্বামী। পরে ওসি তদন্ত রাসেল আহমেদের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে আজ সকালে রবিউল ও তার স্ত্রী লাবনী কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।
নয়াশতাব্দী/জিএস