
কিশোরগঞ্জে এলজিইডির একটি রাস্তা মেরামতকাজে ব্যাপক দুর্নীতি হচ্ছে। এমন অভিযোগ পেয়ে সেই রাস্তায় দুর্নীতির খোঁজে অভিযান চালায় দুদকের কর্মকর্তারা।
গতকাল মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এ অভিযান চলে। টানা তিন ঘণ্টা রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি, মাপামাপি, কাগজপত্রের সঙ্গে বাস্তবের মিল কতটুকু আছে সেসব দেখেন তারা।
রাস্তার ব্যাপারে লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। নানা পর্যবেক্ষণের পর তারাই উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, রাস্তার কাজের মান ভালো। এখানে কোনো দুর্নীতি খুঁজে পাননি তারা। সড়কের মেরামত কাজটি করছেন শহীদুল্লাহ কায়সার শহীদ নামে এক ঠিকাদার।
দুদক জানায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে কিশোরগঞ্জ-নীলগঞ্জ-তাড়াইল সড়ক মেরামতকাজে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। কাজের গুণগতমানও বজায় রাখা হচ্ছে না-এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযানটি চালানো হয়।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, অনুসন্ধান ও তদন্তে এলজিইডির কোনো কর্মকর্তা বা প্রকৌশলীকে রাখা হয়নি। প্রকৌশলী আনা হয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে।
তিনি সড়কের প্রকৌশলগত বিষয়গুলো খুঁটিয়ে দেখেন। একইসঙ্গে দুদকের কর্মকর্তাদের বিষয়গুলো বুঝিয়ে দেন। এভাবে সড়কের তিনটি জায়গা খোঁড়া হয়। এ সময় স্থানীয় লোকজন দুর্নীতির অনুসন্ধান দেখতে ভিড় জমায়।
এই সড়ক মেরামত কাজ কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতি হচ্ছে না জানিয়ে কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল কবির বলেন, ‘কিশোরগঞ্জ-নীলগঞ্জ-তাড়াইল সড়কটির ৪ কিলোমিটার ৩১০ মিটার নতুনভাবে মেরামত করা হয়েছে।
এখানে যে মেকাডাম ধরা ছিল ৭৫ মিলিমিটার। আমরা এর চেয়ে বেশি ৮৫ মিলিমিটার পেয়েছি। কার্পেটিং ছিল ৪০ মিলিমিটার। সেটাও সঠিক পাওয়া গেছে। কাজে যেসব ইট ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলোও ভালো মানের ইট। কাজেই এ রাস্তা মেরামতে কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতি হচ্ছে না বলে ধরে নেওয়া যায়।’
কিশোরগঞ্জ দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক ইশতিয়াদ আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ সড়ক মেরামত নিয়ে শক্ত অভিযোগ ছিল। দুদক ওই অভিযোগকে গুরুত্বের সঙ্গেই গ্রহণ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সকাল থেকে সড়ক মেরামতে অনিয়ম ও দুর্নীতি হচ্ছে কি-না তা অনুসন্ধান করে দুদক। তবে দীর্ঘ অনুসন্ধান করেও এখানে কাজের নিম্নমান পাওয়া যায়নি।’
কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা প্রকৌশলী মো. রাকিব উল হাফিজ বলেন, ‘প্রায় ৯ কোটি টাকার মেরামত কাজ। কাজের প্রায় ৯৫ ভাগ হয়ে গেছে। এখন একটি কালভার্ট ও সড়ক নিরাপত্তার কাজটুকু বাকি রয়েছে। দ্রুত বাকি কাজটুকু শেষ হবে। আমি শতভাগ চেষ্টা করছি, যেন মেরামত কাজটি ভালো হয়।’
নয়াশতাব্দী/এসআর