৩ শ্রাবণ, ১৪৩২

১৮ জুলাই, ২০২৫

গোপালগঞ্জে পুলিশের দুই মামলায় গ্রেপ্তার অন্তত ৯০

নয়া শতাব্দী ডেস্ক প্রকাশিত: জুলাই ১৮, ২০২৫, ৪:১২ অপরাহ্ন
গোপালগঞ্জে পুলিশের দুই মামলায় গ্রেপ্তার অন্তত ৯০

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) 'জুলাই পদযাত্রা' ঘিরে গোপালগঞ্জে সংঘর্ষ, হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দায়ের হওয়া দুই মামলায় মুকসুদপুরে ৬৭ জন ও কাশিয়ানীতে ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে গোপালগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (মুকসুদপুর সার্কেল) মোহাম্মদ আব্দুল বাছেদ বলেন, '১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে সংঘটিত সহিংসতার ঘটনায় সদর থানায় দায়ের হওয়া মামলা ও কাশিয়ানী উপজেলায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে গাছ ফেলে প্রতিবন্ধকতা তৈরির মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।'

গোপালগঞ্জ সদর থানার দায়ের হওয়া মামলার বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির মো. সাজেদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, 'এনসিপির কর্মসূচি ঘিরে পুলিশের গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া, ভাঙচুর, হামলা ও সহিংসতা চালানোর ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক আহম্মেদ আলী বাদী হয়ে ৭৫ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ৪০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।'

সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল বাছেদ বলেন, 'এনসিপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে কাশিয়ানী উপজেলার সাম্পান হাইওয়ে রেস্টুরেন্টের সামনে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে গাছ ফেলে প্রতিবন্ধকতা তৈরির ঘটনায় গতকাল রাতে কাশিয়ানী থানার উপপরিদর্শক আলিমুল হুদা জনি বাদী হয়ে নামীয় ও অজ্ঞাত মিলিয়ে ৩০০-৩৫০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন।'

এদিকে, মুকসুদপুর উপজেলার অন্তত চারজন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৬ জুলাইয়ের সহিংসতার পর গ্রেপ্তার আতঙ্কে অনেকেই বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন।

উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান মোল্লা জানান, তার ইউনিয়ন থেকে কতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা জানেন না। তবে একজন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার আতঙ্কে নিজেও এলাকা ছাড়া বলে জানান তিনি।

এ ছাড়াও, কাশিয়ানী থেকে এইচএসসির এক পরীক্ষার্থীকে গ্রেপ্তারের অভিযোগ করেছে তার পরিবার। যদিও এ অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ।

পরিবারের দাবি, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে বাট্টাইধোবা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে এইচএসসি পরীক্ষার্থী রমিম কাজীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এ বিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল বাছেদ বলেন, 'পুলিশ কোনো এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেনি।'

এর আগে, গত বুধবার এনসিপির পদযাত্রা ঘিরে দিনভর গোপালগঞ্জে দফায় দফায় হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এ হামলায় অংশ নেন। তাদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হন। অন্তত আটজন গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ওই রাতেই গোপালগঞ্জে কারফিউ জারি করে প্রশাসন। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার সরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী গোপালগঞ্জের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে এক ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, কারফিউয়ের সময় দ্বিতীয় দফায় বাড়িয়ে আজ বেলা ১১টা পর্যন্ত এবং আংশিক শিথিল করে বেলা ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বলবৎ রাখা হয়েছে।

নয়াশতাব্দী/ইআর