
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় পারিবারিক কলহের জেরে এক গৃহবধূকে তার স্বামী, শ্বশুর ও ফুফু শ্বাশুড়ি মিলে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (৩১ মে) দিনগত রাতের কোনো এক সময় আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের ঘোলখার গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় গৃহবধূর শ্বশুরবাড়িতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন আখাউড়া থানার ওসি মো. ছমিউদ্দিন।
নিহত রুনা আক্তার (৩২) একই ইউনিয়নের রাণীখার গ্রামের বাসিন্দা, প্রয়াত শিক্ষক শেখ নাছির উদ্দিনের মেয়ে।
ওসি জানান, ঘটনার পরই ভিকটিমের স্বামী সাইদুর রহমানকে বাড়ি থেকে এবং তার শ্বশুর আব্দুস সালামকে হাসপাতাল থেকে আটক করেছে পুলিশ। ভিকটিমের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
নিহতের বড় ভাই শেখ জসিম উদ্দিন জানান, তিন বছর আগে পাশের গ্রামের সাইদুর রহমানের সঙ্গে পারিবারিকভাবে রুনার বিয়ে হয়। তাদের ১০ মাস বয়সী একটি সন্তান রয়েছে। ঢাকায় সেলুনে কাজ করেন সাইদুর। সম্প্রতি গ্রামের বাড়িতে জমি কেনার জন্য শ্বশুরবাড়ি থেকে প্রায় দুই লাখ টাকা নেন সাইদুর। এরপর আবার টাকা আনার জন্য রুনাকে চাপ দিলে তাদের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়।
জসিম উদ্দিনের দাবি, “এই টাকা-পয়সার বিষয় নিয়েই রুনার ওপর শারীরিক নির্যাতন চলছিল। শেষ পর্যন্ত তাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক অনন্ত কুমার জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ভিকটিম মারা যায়। হাসপাতালে নিয়ে আসার পর ভিকটিমর বুকে গভীর ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে, যা প্রাণঘাতী ছিল।
হাসপাতালের মর্গে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোছা. শিরিন আক্তার। তিনি জানান, ভিকটিমের বাম বুকের উপরে গলার নিচে সাড়ে সাত ইঞ্চি গভীর ও ২ ইঞ্চি প্রস্থের ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়া তার অনামিকা আঙুলে কাটা রক্তাক্ত জখম রয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
আখাউড়া থানার ওসি আরো জানান, ভিকটিমের স্বামী সাইদুরকে আটকের পর প্রথমে স্থানীয় ধরখার পুলিশ ফাঁড়িতে রাখা হয়েছিল৷ বর্তমানে তাকে আখাউড়া থানা হাজতে আটক করা হয়েছে। ভিকটিমের শ্বশুর আব্দুস সালামকে জেলা সদর হাসপাতাল থেকে আটকের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা হাজতে রাখা হয়েছে।
নয়াশতাব্দী/ইআর