৫ আষাঢ়, ১৪৩২

১৯ জুন, ২০২৫

লালপুর হাসপাতালে ৩ দিনে ভর্তি দেড় শতাধিক ডায়রিয়া রোগী

নয়া শতাব্দী ডেস্ক প্রকাশিত: জুন ২, ২০২৫, ৩:৫৯ অপরাহ্ন
লালপুর হাসপাতালে ৩ দিনে ভর্তি দেড় শতাধিক ডায়রিয়া রোগী

নাটোরের ৫০ শয্যা বিশিষ্ট লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত ৩ দিনে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে দেড় শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছেন। হঠাৎ ডায়রিয়া রোগীর এমন অতিরিক্ত চাপে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। খাবার ও পানিতে থাকা জীবাণু থেকে তারা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। 

সোমবার (২ জুন) দুপুর পর্যন্ত পেট ব্যথা, ডায়রিয়া ও বমির উপসর্গ নিয়ে গত ৪৮ ঘন্টায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৬৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন বলে জানিয়েছে হাসপাতাল সূত্র। বেড সংকুলান না হওয়ায় ৬০ জনের বেশি রোগী হাসপাতালের মেঝে ও করিডরে চিকিৎসা নিচ্ছেন। 

জানা যায়, আক্রান্ত এসব রোগী পার্শ্ববর্তী পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) বিভিন্ন কারখানায় কর্মরত শ্রমিক।
 
চিকিৎসা নিতে আসা মোছাঃ সুমি বেগম (২৩) জানান, তিনি ঈশ্বরদী রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) এর রেনেসাঁ বাংলাদেশ লিমিটেডের সুইং বিভাগের একজন শ্রমিক। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার পেট ব্যথা শুরু হয়। এরপর ডায়রিয়া ও বমি শুরু হলে তিনি উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে দুইদিন যাবৎ চিকিৎসা নিচ্ছেন। 

একই ধরনের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন নাকানো বাংলাদেশ লিমিটেডের শ্রমিক সুমাইয়া খাতুন (৩০), অস্কর বাংলাদেশ লিমিটেডে কর্মরত একজন শ্রমিক মোসাঃ মিম খাতুন (৩০), ভিনটেক্স ডেনিম স্টুডিও লিমিটেড (এবা গ্রুপ) এর মো: মহিদুল খান  (২৫) সহ অন্যরা।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ মুনজুর রহমান বলেন, খাবার ও পানিতে থাকা জীবাণু থেকে রোগীরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত চার দিনে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১৭০ জনের বেশি রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। সোমবার দুপুর পর্যন্ত সর্বশেষ ২৪ ঘন্টায় আরো ৪০ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। ইতিমধ্যে সেনাবাহিনীর মেডিকেল টিম হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন। প্রয়োজন হলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় নেওয়া হবে। তারাও প্রস্তুত রয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: মেহেদী হাসান জানান, তিনি রবিবার দুপুরে হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ঈশ্বরদী রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) নির্বাহী পরিচালক এ.বি.এম. শহিদুল ইসলাম  বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা অবগত রয়েছি। ইপিজেড- এ চলমান ২৪টি কারখানার শ্রমিকদের  ইপিজেড স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পানি থেকে সমস্যা হয়েছে কিনা জানার জন্য ইতিমধ্যে ইপিজেডের পানি পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। আপাতত শ্রমিকদের ইপিজেডে সরবরাহকৃত পানি পান করতে নিষেধ করা হয়েছে। 

নয়াশতাব্দী/এনএ