
জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) নাম বদল করা হয়েছে। নতুন নাম ‘সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি’। তবে এই কমিটি নিয়ে এখনও ঐকমত্যে আসা যায়নি বলে জানিয়েছেন ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি ড. আলী রীয়াজ।
বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দ্বিতীয় পর্বের ষষ্ঠ দিনের বৈঠক শেষে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল ও তিন বাহিনীর প্রধান বাদে অন্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেবে এই কমিটি। সেই কমিটিতে কারা থাকবে তা নিয়ে এখনও ঐকমত্য হয়নি। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নিয়ে এখনও সিদ্ধান্তে আসা যায়নি।
তিনি আরও বলেন, সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার ৫টি নতুন মূলনীতি নিয়ে অধিকাংশ দলই একমত। এ নিয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত হবে।
বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, সাংবিধানিক নিয়োগ কমিটি নিয়ে আমরা একমত নই। আইনের সংস্কার না করে নির্বাহী বিভাগকে দুর্বল করার মানে হয় না। একদল স্বৈরাচার হয়েছিল বলে নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা কমিয়ে আনার প্রয়োজন নেই। এছাড়া, একজন ব্যক্তি ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয়, ঐকমত্য কমিশনের এমন প্রস্তাবে বিএনপি একমত বলেও জানান তিনি।
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান বলেন, সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার ৫টি মূলনীতির সাথে আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস যুক্ত করার মত দেয়া হয়েছে। তাতে বামপন্থী দলগুলো নেতিবাচক মতামত দিয়েছে। সাংবিধানিক নিয়োগ কমিটি নিয়ে বিএনপিসহ অল্প কয়েকটি দল বাদে সবাই একমত। কেউ যাতে ফ্যাসিবাদি আচরণ না করতে পারে তাই নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা কমানো উচিত। প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ দশ বছর নিয়েও একমত জামায়াত।
এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, মূলনীতি নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। বাহাত্তরের সংবিধানের মূলনীতি বাদ দিয়ে নতুন প্রস্তাবিত মূলনীতি প্রনয়ন করতে হবে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়োগ কমিটির প্রস্তাবকে সমর্থন করে এনসিপি। কয়েকটি দল পুরোনো ধারনা নিয়েই পড়ে আছে। গণ অভ্যুত্থানের মানুষের চাওয়া-পাওয়াকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। এ সময় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটির প্রস্তাবকে মেনে নিতে বিএনপির প্রতি আহ্বানও জানান তিনি।
গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি নূরুল হক নূর বলেন, সাংবিধানিক নিয়োগ কমিটি না হলেই প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ দশ বছরে রাজি হবে বিএনপি, এমন মনোভাবের বিরোধীতা করেছে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল।
আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মঞ্জু বলেন, বিএনপি প্যাকেজ প্রস্তাব নিয়ে গেছে। এটা না হলে ওটা মানতে হবে, এটা আরেকটি ফ্যাসিবাদী আচরণ। এমন আচরণ করলে আরেকটি গণ অভ্যুত্থান হবে। এমন সুন্দর পরিবেশ পেয়েও যদি রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতি নিয়ে দলগুলো একমত না হয়, তাহলে বাংলাদেশের পরিণতি খারাপের দিকে।
নয়াশতাব্দী/এসআর