১১ আষাঢ়, ১৪৩২

২৬ জুন, ২০২৫

প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ নিয়ে যে অবস্থান বিএনপির

নয়া শতাব্দী ডেস্ক প্রকাশিত: জুন ২৫, ২০২৫, ৮:০৫ অপরাহ্ন
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ নিয়ে যে অবস্থান বিএনপির

প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এই আলোচনা হয়।

বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলো প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি নিয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ দশ বছরের বিষয়ে বিএনপি একমত। তবে সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি নিয়ে একমত নয়। এই দুইটি বিষয় একে অপরের সাথে সংযুক্ত।

এ সময় এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু সালাহউদ্দিন আহমদকে উদ্দেশ্য করে বলেন, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি নিয়ে একমত হতে প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রী মেয়াদ একটু বাড়িয়ে নেন। এমন প্রস্তাব রাখা যায় কিনা?

ড. আলী রীয়াজ বলেন, আপনাদের কেন মনে হচ্ছে সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার সাথে জড়িত?

জবাবে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় যাদের অভিজ্ঞতা রয়েছে, যারা সংসদে গিয়েছেন, তাদের অভিজ্ঞতা হলো, এই অথরিটি অন্য কারও কাছে থাকলে প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্র পরিচালনায় পদে পদে বাঁধা পাবেন। আইনের মাধ্যমে সার্চ কমিটি করা হলে বিএনপির আপত্তি নেই।

এরপর আলী রীয়াজ বলেন, স্বাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো যেখানে প্রধানমন্ত্রী হস্তক্ষেপ সংবিধান বহির্ভূত, সেখানে তার ক্ষমতা কী অর্থে কমে?

জবাবে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এখানে বোঝার বেশকম হচ্ছে। সার্চ কমিটি আইনের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হলে সংবিধানে নিয়োগ কমিটি দরকার হয় না।’

আলী রীয়াজ বলেন, এক্ষেত্রে ক্ষমতায় যাওয়া দল আইন পরিবর্তন করবে না, তার গ্যারান্টি কী? পাল্টা প্রশ্নে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, সংবিধানই যে পরিবর্তন হবে না, এরই বা নিশ্চয়তা কী?

আলী রীয়াজ বলেন, সংবিধান পরিবর্তন দূরূহ, তবে আইন পরিবর্তন করা সহজ।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ক্ষমতায় গেলে আইন পরিবর্তন করা হবে এমনটা মনে করা হলে ঐকমত্যের যে চেষ্টা হচ্ছে, তার কী কোনো মানে আছে? সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ আইনের মধ্যে আনতে হবে। পাশাপাশি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

ড. আলী রীয়াজ সালাহউদ্দিনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, এখানে একটির ওপর আরেকটি নির্ভর করছে। তাই একটি রেখে অপরটির সিদ্ধান্ত নেয়া যাচ্ছে না। সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি হলে প্রধানমন্ত্রী ১০ বছরের বিষয়ে আপনারা একমত নন।

এ সময় সালাহউদ্দিন আহমদ তাতে সম্মতি জানান।

মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, বিএনপি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের বিষয়টি মেনে নিলে প্রধানমন্ত্রীর ১০ বছরের বিষয়টির ছাড় দেয়া নিয়ে আলোচনা হতে পারে কি না?

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আপনারা এক ব্যক্তিকে সীমাহীনভাবে ক্ষমতায় দেখতে চান না। আবার এখন ছাড় দেবেন, এটা কেমন কথা? বাংলাদেশ অতীত অভিজ্ঞতা অনেক তিক্ত, তা ঠিক। বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যদি প্রধানমন্ত্রী অসংখ্যবার হতে পারবে না এমনটা করা হয়, তাহলে সেখানেই তো একটা বিপ্লব হয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রের সকল অঙ্গের মধ্যে ভারসাম্য রেখে পরিচালনা করতে হবে।

নয়াশতাব্দী/এসআর