৩০ আষাঢ়, ১৪৩২

১৪ জুলাই, ২০২৫

জুলাই বিপ্লব

এই দিনে শেখ হাসিনার কটাক্ষ করা বাক্যে ফুঁসে ওঠে বাংলাদেশ

নয়া শতাব্দী ডেস্ক প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২৫, ৭:৫৫ পূর্বাহ্ন
এই দিনে শেখ হাসিনার কটাক্ষ করা বাক্যে ফুঁসে ওঠে বাংলাদেশ

‘মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিরা চাকরি না পেলে কি রাজাকারের নাতি-পুতিরা চাকরি পাবে?’ শেখ হাসিনার এই এক কথাই আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের কফিনে যেন শেষ পেরেক ঠুঁকে দেয়। শিক্ষার্থীদের কটাক্ষ করে দেয়া সেই বক্তব্যের প্রতিবাদে মধ্যরাতেই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা। রচিত হয় সেই ঐতিহাসিক স্লোগান- ‘তুমি কে আমি কে রাজাকার রাজাকার, কে বলেছে কে বলেছে- স্বৈরাচার স্বৈরাচার’। সব মিলিয়ে ২০২৪ সালের জুলায়ের গুরুত্বপূর্ণ এই দিনটি কেমন ছিল?

গত বছরের ১৪ জুলাই গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের কটাক্ষ করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিরা না পেলে কি রাজাকারের নাতি-পুতিরা চাকরি পাবে?’ 

 
আর এই এক বাক্যে ফুঁসে ওঠে বাংলাদেশ। স্বাধীন বাংলায় নিজেদের ন্যায্য অধিকার চাইতে গেলেই স্বাধীনতাবিরোধী তকমা পাওয়া, এ জাতির জন্য নতুন কিছু না হলেও ‘২৪- এর লড়াইয়ে রাজাকার উপাধিকে মেনে নেননি তারা।
 
তাৎক্ষণিকভাবে তৎকালীন সরকার প্রধানের এমন বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। প্রতিবাদ জানাতে রাত ১০টা থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসিতে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।
 
এক পর্যায়ে মধ্যরাতে ঢাবির বিভিন্ন হল থেকে মিছিল নিয়ে রাজপথে নামেন হাজার হাজার শিক্ষার্থী। এসময় হলের গেটে গেটে বাঁধা দেয় ছাত্রলীগ কিন্তু তা রুখতে পারেনি শিক্ষার্থীদের স্রোত। হলের গেট ভেঙে কেউবা তালা ভেঙে বেরিয়ে আসেন দলে দলে। হলের তালা ভেঙ্গে সেই মিছিলে যোগ দেন ঢাবির সবগুলোর হলের মেয়েরা।
 
আরও পড়ুন: জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অবদান
 
মিছিল হয় জাহাঙ্গীরনগর ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়েও। সেখানেও বাঁধা দেয় ছাত্রলীগ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করলে হামলা চালায় ছাত্রলীগ।
 
এর আগে বেলা ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পদযাত্রা শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় শাহবাগ, মৎস ভবন হয়ে হাইকোর্ট এবং জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ছড়িয়ে যায় শিক্ষার্থীদের অবস্থান। বেলা দেড়টায় জিরো পয়েন্টে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
 
বারবার বাঁধার মুখে পড়লেও শিক্ষার্থীদের গণপদযাত্রা এগোতে থাকে বঙ্গভবনের দিকে। এক পর্যায়ে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যান তারা।
 
আরও পড়ুন: সংস্কারবিহীন নির্বাচন হলে আবারও গণ-অভ্যুত্থান ঘটতে পারে: নুর
 
এরপর সব গ্রেডে কোটার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দেন শিক্ষার্থীদের ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দল। দাবি মানতে দেয়া হয় ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম।
 
একই দাবিতে ১৭ জেলায় পদযাত্রা ও বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।
 
কোটা পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ও প্রকাশ হয় ১৪ জুলাই।

নয়াশতাব্দী/ইআর